আদালতে বিচারক না থাকায় ভোগান্তিতে বিচারপ্রার্থীরা


পটুয়াখালীর দশমিনায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারক না থাকায় চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন বিচারপ্রার্থীরা। বদলিজনিত কারণে ম্যাজিস্ট্রেটের পদটি প্রায় তিন মাস শূন্য রয়েছে। নতুন ম্যাজিস্ট্রেট যোগদান না করায় কার্যত বন্ধ রয়েছে সব ধরনের বিচারিক কার্যক্রম। নতুন করে কোনো নালিশী মামলা রুজু হচ্ছে না। গ্রেফতার বা আটক আসামিদের বিষয়ে আইনি সমাধানেও দেখা দিয়েছে নানা জটিলতা। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুপস্থিতিতে করণীয় নিয়ে নেই কোনো সুনির্দিষ্ট নিদের্শনাও। এ অবস্থায় আসামি ব্যবস্থাপনা করতে গিয়ে নানা জটিলতায় পড়তে হচ্ছে আদালত সংশ্লিষ্ট পুলিশকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দশমিনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সমীর মল্লিককে চলতি বছরের ২০ এপ্রিল ভোলায় বদলি করা হয়। তার পরিবর্তে দশমিনার আদালতে কোনো ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করা হয়নি। পটুয়াখালী সদরের একজন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাময়িক দায়িত্ব পালন করছেন। এদিকে দশমিনা জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে বর্তমানে প্রায় ১৯১টি সিআর ও জিআর-৩৮৯টি মামলা চলমান রয়েছে। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বদলির পর নতুন কোনো সিআর মামলা না হলেও ২০এপ্রিল থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত আর ২০টি মামলা রুজু হয়েছে।
দশমিনা বারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খোরর্শেদ আলম জানান, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় বিচার প্রার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অহেতুক হয়রানির শিকার হচ্ছেন মামলার আসামিপক্ষ। থানা পুলিশের দায়ের করা মামলাগুলোর জামিন চাওয়া নিয়ে যেমন বিড়ম্বনা হচ্ছে তেমনি জামিনযোগ্য মামলায় আসামিরা অযথা জেল খাটছেন। সামান্য কারণেও দশমিনা থেকে থেকে প্রায় প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরের জেলা সদরের আদালতে নিতে হচ্ছে মামলার নথিগুলো।
মামলা সংশ্লিষ্ট একাধিক আইনজীবী জানান, থানা থেকে এফআইআর হওয়া কিছু মামলায় আসামি গ্রেফতার হলেও ম্যাজিস্ট্রেট না থাকা যথাসময় উপস্থাপন ও শুনানি করা যাচ্ছে না। পুলিশের ধরে আনা (গ্রেফতার) আসামিদের ফরোয়াডিং করা ও ভিকটিমের জবানবন্দি নেয়াও বন্ধ আছে।
দশমিনা আদালতের সাবেক এপিপি এ্যাডভোকেট এনামুল হক রতন বলেন, ‘আদালতে চলমান মামলার সাক্ষী জানানো যাচ্ছে না ও নতুন কোনো মামলাও রুজু করা যাচ্ছে না। এছাড়া গ্রেফতার করা আসামিদের জামিন চাওয়া নিয়ে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। সামান্য কারণে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বিচারপ্রার্থীদের জেলা সদরে যেতে হচ্ছে। এতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত খরচ। বিচারাধীন মামলা গুলোর বিচারকির কার্যক্রম কার্যত বন্ধ থাকায় অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে দশমিনা জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালত। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বিচারপ্রার্থীরা।
আদালতের জিআরও মো. মিজান জানান, আদালতে বিচারক না থাকায় চরম সমস্যা হচ্ছে। তবে আশা করি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারক পাওয়া যাবে।
দৈএনকে/ জে. আ
