রাজনৈতিক ও সরকারি মহলে অপপ্রচারের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ


রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সরকারি চাকরিজীবীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের মাধ্যমে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে লিপি আক্তার নামে এক নারীর বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নিজেকে বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মহলকে ব্ল্যাকমেইল করে আসছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
লিপি আক্তারের গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলার চরফ্যাশন থানার নাংলা পাতা গ্রামে। পিতা সিরাজ মাঝি। পোস্ট অফিস আনজুর হাট হলেও বর্তমানে তিনি ঢাকার গাবতলী এলাকায় বসবাস করছেন। তার স্বামী ছালাম গাবতলীতে বালুর ব্যবসা করেন। লিপি চট্টগ্রামে একটি গার্মেন্টসে প্রায় ১৫ বছর পোশকশ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে ঢাকায় কোন কাজকর্ম না করলেও প্রতারণা চক্রে জড়িয়ে পড়েছেন। জানা গেছে, ছালামের এটি তৃতীয় বিয়ে।
ভিন্ন পরিচয়ে চলাফেরা করা এই নারী দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী মহলে নিজের অবস্থান গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। তিনি নিজেকে কখনো মানবাধিকার কর্মী, কখনো সাংবাদিক অথবা কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচয় দেন। এই ছদ্ম পরিচয়ের আড়ালে তিনি সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেও কুৎসিত অপপ্রচার চালিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের ভাষ্য অনুযায়ী, লিপি আক্তার বিশেষভাবে টার্গেট করেন যেসব ব্যক্তি তার প্রতারণা ও অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া দেন না। তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপমানজনক ও ভিত্তিহীন তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে তিনি ভয় দেখান, যাতে তারা অর্থ দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বাধ্য হন।
এ বিষয়ে এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, তিনি (লিপি আক্তার) আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেন। পরে আমি বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে চরফ্যাশন ও ঢাকায় একাধিক মৌখিক অভিযোগ রয়েছে। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মামলার রেকর্ড পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পুলিশ বিভাগ তদন্তে আগ্রহী হলেও অভিযোগকারীদের অনিচ্ছার কারণে আইনগত অগ্রগতি হচ্ছে না।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড শুধু ব্যক্তির সম্মানহানিই নয়, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও রাজনীতির ক্ষেত্রেও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। তারা পরামর্শ দিয়েছেন, দ্রুত তদন্ত করে সত্য উদঘাটন ও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
জনসচেতন মহলের দাবি, লিপি আক্তারের মতো ছদ্মবেশী প্রতারকদের চিহ্নিত করে কঠোর নজরদারি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে সমাজে অপপ্রচারের মাধ্যমে প্রতারণার এই প্রবণতা আরও বিস্তৃত হতে পারে।
