সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • ইসলামিক এনজিওগুলোকে সামাজিক ব্যবসায় এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে হাজির হওয়ার নির্দেশে গেজেট প্রকাশ সংস্কারবিরোধী দেখানোর চেষ্টা চলছে পরিকল্পিতভাবে: মির্জা ফখরুল ইউএস বাংলার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জব্দকৃত জমি বিক্রির অভিযোগে ফের বিতর্কে তারিক সিদ্দিক নতুন প্রস্তাবে স্থবিরতা, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিয়ে উদ্বেগ: ফখরুল যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর খামেনির জনসমক্ষে আত্মপ্রকাশ বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার কোনো সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শেষের নাটকে মোস্তাফিজের জাদু, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সিরিজে বাঁচল বাংলাদেশ এশিয়ান কাপে দুর্দান্ত আগমন, তুর্কমেনিস্তানকে গোল বন্যায় ভাসাল বাংলাদেশ নারী দল
  • ফটিকছড়ি আসনে নির্বাচন ঘিরে উত্তাপ: সম্ভাব্য প্রার্থীদের সরব পদচারণা

    ফটিকছড়ি আসনে নির্বাচন ঘিরে উত্তাপ: সম্ভাব্য প্রার্থীদের সরব পদচারণা
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের অন্যান্য আসনের মতো চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ আসন ফটিকছড়িতেও রাজনৈতিক উত্তাপ তুঙ্গে। নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণা এবং রাজনৈতিক সমীকরণ নতুনভাবে সাজানোর খবরে এখানকার রাজনৈতিক মাঠ জমে উঠতে শুরু করেছে।

    ফটিকছড়ি আসনে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দল ও জোট থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্থানীয় নেতাকর্মী এবং তৃণমূল ভোটারদের মুখে একটাই প্রশ্ন- কে হচ্ছেন ধানের শীষের কান্ডারী, কে হচ্ছেন ইসলামী জোটের মুখ, আর কে বা হচ্ছেন ইসলামী আন্দোলন ও অন্যান্য ধর্মভিত্তিক দলের প্রার্থী।

    বিএনপির প্রার্থী তালিকায় আলোচনায় চারজন

    বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে এই আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব কাদের গণি চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফয়সাল মাহমুদ ফয়জী, ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও বর্তমান উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শিল্পপতি সরওয়ার আলমগীর এবং বর্তমান উপজেলা আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহার।

    তবে তৃণমূল সূত্র মতে, এ চারজনের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে কাদের গণি চৌধুরী, সরওয়ার আলমগীর এবং কর্নেল (অব.) বাহারকে ঘিরে। মাঠে সবচেয়ে বেশী আলোচনায় রয়েছে সরওয়ার আলমগী। 

    দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবারের মনোনয়ন তিনটি মানদণ্ডে নির্ধারিত হবে —

    ১. ত্যাগ-সংগ্রাম ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে সক্রিয়তা

    ২. সততা ও সুনাম

    ৩. জনসম্পৃক্ততা ও জনপ্রিয়তা

    স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপির একাংশ মনে করছে, শীর্ষ নেতারা ঐক্যবদ্ধ না হলে অতীতের মতো এবারও দলের বিজয় কঠিন হয়ে পড়বে। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, দলীয় কোন্দল থাকলে সুযোগ নিতে পারে চৌধুরী পরিবারের কেউ।

    জামায়াত ও ইসলামী জোটের প্রস্তুতি

    বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে মহানগর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমীনকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণসহ প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন।

    অন্যদিকে, কওমি মাদরাসা-ভিত্তিক ধর্মীয় রাজনৈতিক সংগঠন নেজামে ইসলাম পার্টি থেকে সমাজসেবী আল্লামা শেখ হুসাইন মুহাম্মদ শাহজাহান ইসলামাবাদীকে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে ইসলামিক জোট থেকেও তাকে একক প্রার্থী বলে দাবী করা হচ্ছে।

    স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ফটিকছড়িতে বিপুল সংখ্যক কওমি মাদরাসা এবং আলেম সমাজের ভোট ব্যাংক রয়েছে। জামায়াত-বিএনপি জোটের বাইরে এই বিশাল ভোট ব্যাংক যে কোনো দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও হেফাজতের আমীরের অবস্থান ফটিকছড়িতে, তার সমর্থনের উপর ফটিকছড়ির আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

    ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা হয়নি

    ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবারও ফটিকছড়িতে প্রার্থী দিতে পারে বলে জানা গেছে। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনো আসেনি।

    আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য দলের তৎপরতা

    আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি এবং তাদের নেতাকর্মীরা সবাই পলাতক রয়েছে। এছাড়াও সরকার তাদের সব ধরণের সাংগঠনিক কার্যক্রম ইতিমধ্যে নিষিদ্ধও করেছে। একইসঙ্গে অন্যান্য ক্ষুদ্র রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও মাঠ গোছাতে শুরু করেছে।

    উপজেলায় কোন্দল, মনোনয়ন যুদ্ধ ও নতুন সম্ভাবনা

    বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং ক্ষমতার বলয় ঘিরে নানা আলোচনা চলছে। বিশেষ করে সরওয়ার আলমগীর গ্রুপ ও বাহার গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। সর্বত্র একটাই প্রশ্ন আগামী নির্বাচনে কে পাচ্ছেন ধানের শীষের টিকেট।

    অন্যদিকে ইসলামপন্থী দলগুলোর ঐক্য নিয়ে আলোচনাও চলছে। কওমি ও মাদরাসা ভোটব্যাংক কেন্দ্রীভূত হলে যে কোনো বড় দলের জন্য এটি হতে পারে নির্ণায়ক। বর্তমানে ইসলামী রাজনীতির কলকাঠি চরমোনাই পীরের হাতে হলেও উত্তর চট্টগ্রামে তাদের সাংগঠনিক তেমন অবস্থান চোখে পড়ে না। বিশেষ করে কওমি মাদরাসা গুলোতে তাদের অবস্থান নাই বললেও চলে।

    জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষিতে যদি সব ইসলামী দল এক হয়ে জামায়াত, হেফাজত ও অন্যান্য ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে একক প্রার্থী ঘোষণা করে তাহলে সারাদেশের মত পাল্টে যেতে পারে ফটিকছড়ির ইতিহাসও।

    ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ফটিকছড়িতে যে বহুমুখী রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হচ্ছে, তা দিন দিন আরও উত্তপ্ত হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয়, এই আসনে শেষ পর্যন্ত কার হাতে উঠছে ধানের শীষ, কার হাতে ইসলামিক জোটের ব্যানার আর কার হাতে উঠছে ইসলামী আন্দোলনের প্রতীক।


    দৈএনকে/ জে. আ
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ