সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • ইসলামিক এনজিওগুলোকে সামাজিক ব্যবসায় এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে হাজির হওয়ার নির্দেশে গেজেট প্রকাশ সংস্কারবিরোধী দেখানোর চেষ্টা চলছে পরিকল্পিতভাবে: মির্জা ফখরুল ইউএস বাংলার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জব্দকৃত জমি বিক্রির অভিযোগে ফের বিতর্কে তারিক সিদ্দিক নতুন প্রস্তাবে স্থবিরতা, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিয়ে উদ্বেগ: ফখরুল যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর খামেনির জনসমক্ষে আত্মপ্রকাশ বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার কোনো সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শেষের নাটকে মোস্তাফিজের জাদু, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সিরিজে বাঁচল বাংলাদেশ এশিয়ান কাপে দুর্দান্ত আগমন, তুর্কমেনিস্তানকে গোল বন্যায় ভাসাল বাংলাদেশ নারী দল
  • ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তির ভবিষ্যৎ কি অনিশ্চিত?

    ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তির ভবিষ্যৎ কি অনিশ্চিত?
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    ঘনিয়ে আসছে ৯ জুলাইয়ের সময়সীমা, কিন্তু ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বহুল আলোচিত ‘বিগ, বিউটিফুল’ বাণিজ্য চুক্তির ভবিষ্যৎ ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী চুক্তিটি কয়েক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত হওয়ার কথা থাকলেও, জটিল আলোচনা ও পারস্পরিক দাবিদাওয়ায় চুক্তির অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে। দুই পক্ষের কৌশলগত অবস্থান ও বাণিজ্যিক স্বার্থে মতবিরোধ থাকায় দরকষাকষি পৌঁছেছে কঠিন পর্যায়ে।

    হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট যদিও এই চুক্তিকে ‘সম্ভাব্য’ বলে আভাস দিয়েছেন। আর ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও একে ‘বড়, ভালো, সুন্দর’ চুক্তি বলে স্বাগত জানিয়েছেন। তবুও মূল আলোচনায় কৃষিপণ্য, গাড়ির যন্ত্রাংশ এবং ভারতীয় ইস্পাতের ওপর শুল্ক হ্রাসের মতো বিষয়ে মতবিরোধ কাটছে না।
    ভারতের সাবেক বাণিজ্য কর্মকর্তা ও গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) প্রধান অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, পরবর্তী সাত দিন নির্ধারণ করে দেবে—ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একটি সীমিত ‘মিনি-চুক্তি’তে পৌঁছাবে, নাকি আলোচনা ভেঙে পড়বে।

    যুক্তরাষ্ট্র বহুদিন ধরেই ভারতের কৃষি বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করছে। তবে ভারত তাতে বাধা দিয়ে আসছে খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষকের জীবন-জীবিকা এবং গ্রামীণ অর্থনীতির স্বার্থে। ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের রিচার্ড রসো বলেন, ভারতের কৃষিখাত উন্মুক্ত করা রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর।

    আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে ভারতের ‘কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার’ বা কিউসিও—যা আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এগুলোর কারণে মার্কিন পণ্যের প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

    বর্তমানে দুই দেশের কৃষিপণ্যের বাণিজ্য প্রায় আট বিলিয়ন ডলারের মতো, যেখানে ভারত মূলত চাল, চিংড়ি ও মসলা রপ্তানি করে; আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাদাম, আপেল ও ডাল আমদানি করে। তবে যুক্তরাষ্ট্র আরও বড় পরিসরে ভুট্টা, তুলা, সয়াবিন ইত্যাদি রপ্তানি করতে চায়, যাতে ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা কমানো যায়।

    বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এ চুক্তি ভারতের কৃষকদের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) এবং সরকারি খাদ্যক্রয় ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিতে পারে।

    বিশ্লেষকদের মতে, একটি সীমিত বা ‘মিনি-চুক্তি’ হতে পারে বাস্তবসম্মত পথ। এতে শিল্পপণ্যে শুল্ক কমানো, যেমন- গাড়ি আমদানির ওপর ছাড়, এবং কিছু নির্বাচিত কৃষিপণ্যে কোটা নির্ধারণের মাধ্যমে সীমিত প্রবেশাধিকার দেওয়া হতে পারে—যেমন: বাদাম, মদ, জলপাই তেল, আপেল, আভোকাডো ইত্যাদি।

    এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র চায় ভারত যেন তেল, গ্যাস, বোয়িং প্লেন, হেলিকপ্টার এবং পরমাণু চুল্লি কেনার ক্ষেত্রে বড় বাণিজ্যিক অর্ডার দেয়। তারা আমাজন-ওয়ালমার্টের মতো কোম্পানির জন্য খুচরা বাজারে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) সহজ করতেও আহ্বান জানাতে পারে।

    চুক্তি না হলেও ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের আশঙ্কা কম বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বরং ১০ শতাংশ ‘বেজলাইন’ হারে শুল্ক আরোপ হতে পারে, যা বর্তমানে বিদ্যমান এমএফএন (মোস্ট ফেভরড ন্যাশন) হারের ওপর বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।

    গোটা পরিস্থিতি নিয়ে জিটিআরআইর শ্রীবাস্তব বলেন, ট্রাম্পের ক্ষেত্রে চমক অস্বাভাবিক নয়। যদিও ভারতকে লক্ষ্য করে এককভাবে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া ন্যায্য নয়, তবু অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ