সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • ইসলামিক এনজিওগুলোকে সামাজিক ব্যবসায় এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে হাজির হওয়ার নির্দেশে গেজেট প্রকাশ সংস্কারবিরোধী দেখানোর চেষ্টা চলছে পরিকল্পিতভাবে: মির্জা ফখরুল ইউএস বাংলার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জব্দকৃত জমি বিক্রির অভিযোগে ফের বিতর্কে তারিক সিদ্দিক নতুন প্রস্তাবে স্থবিরতা, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিয়ে উদ্বেগ: ফখরুল যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর খামেনির জনসমক্ষে আত্মপ্রকাশ বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার কোনো সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শেষের নাটকে মোস্তাফিজের জাদু, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সিরিজে বাঁচল বাংলাদেশ এশিয়ান কাপে দুর্দান্ত আগমন, তুর্কমেনিস্তানকে গোল বন্যায় ভাসাল বাংলাদেশ নারী দল
  • সড়ক দুরবস্থায় পর্যটনে ধস, বিপাকে বিছনাকান্দি-পান্থুমাই

    সড়ক দুরবস্থায় পর্যটনে ধস, বিপাকে বিছনাকান্দি-পান্থুমাই
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    পর্যটন নগরী হিসেবে খ্যাত সিলেটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ সড়ক সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক যেনো দুর্ভোগের প্রতীক। জনপ্রিয় পর্যটন স্পট বিছানাকান্দি, পান্থুমাইসহ গোয়াইনঘাট এলাকার লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটির বেহাল এখন সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।

    প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা বিছানাকান্দি ও পান্থুমাইয়ের মতো পর্যটন এলাকাগুলোতে ঈদের ছুটিতেও পর্যটকদের  ভাটা। কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের কথা বললে তারা জানান, এবারের ঈদে বিছানাকান্দি ও পান্থুমাইয়ের পর্যটক নেই বললেই চলে। কারণ, রাস্তার দুরবস্থার কারণে সেখানে পৌঁছানোই দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে পর্যটকদের । পিচ উঠে যাওয়া, গভীর গর্ত, ভাঙা কালভার্ট ও পানিতে ডুবে থাকা রাস্তার এমন করুণ চিত্র যেন প্রতিদিনের বাস্তবতা।

    এদিকে সম্প্রতি সিলেটে এসে দুইজন উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, পাথর কোয়ারি খোলা হবে না, বরং পর্যটনকেই দেওয়া হবে সর্বোচ্চ প্রাধান্য। এই ঘোষণায় স্থানীয় পর্যটনখাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আশার আলো দেখা দিলেও, বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। পর্যটনের বিকাশের জন্য যেখানে অবকাঠামো উন্নয়ন ও যোগাযোগব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি, সেখানে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বছরের পর বছর ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকায় পর্যটন কার্যত থমকে গেছে।

    সরেজমিনে দেখা যায়, গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়কের বেশিরভাগ অংশ ভাঙাচোরা ও অসংখ্য খানাখন্দে পরিপূর্ণ প্রতিদিনই হচ্ছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।  কোনো কোনো জায়গায় হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রাস্তা নাকি জলাশয়-তা আলাদা করা মুশকিল। শিক্ষার্থী, রোগী, পর্যটকসহ সকল শ্রেণির মানুষ এই সড়কে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। দেখা গেছে, অল্প বৃষ্টিতেই যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়, সময় লাগে কয়েক গুণ বেশি।

    জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারি শুরু হয় সালুটিকর-তোয়াকুল-বঙ্গবীর-গোয়াইনঘাট সড়কের আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ। দুই ভাগে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই কাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় প্রায় ২৯ কোটি টাকা। চুক্তিমূল্যে কাজটি পায় ডিসিএল অ্যান্ড এমডিএইচ (জেবি) নামে একটি যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মূল ঠিকাদার বরিশালের দেলোয়ার হোসেন, তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন সুনামগঞ্জের ফয়সল নামের এক ঠিকাদার।

    কাজের নির্ধারিত সময় ছিল ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত, যা পরে আরও ৫ মাস বাড়িয়ে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এতদিনেও মাত্র ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে উপজেলা প্রকৌশলীর বক্তব্য। যদিও স্থানীয়রা বলছেন, ৩০ শতাংশও হয়নি। অনেক স্থানে ঢালাইকৃত অংশ ভেঙে গেছে, ফাটল ধরেছে।

    এই পরিস্থিতির প্রতিবাদে শনিবার সালুটিকর বাজারে এক বিশাল মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে এলাকাবাসী দাবি করেন, ২৭ কোটি টাকা ব্যায়ে সালুটিকর-তোয়াকুল-বঙ্গবীর-গোয়াইনঘাট সড়ক উন্নয়নের জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হয় প্রায় কয়েক বছর আগে। কাগজে-কলমে কাজ শুরু হলেও বাস্তবে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। রাস্তার কিছু কাজ দৃশ্যমান হলেও ঢালাই দেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই তা উঠে যাচ্ছে পাথর ও ঢালাইকৃত সড়কে কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে  ফাটল । কাজে টেকসই কোনো পরিকল্পনা নেই। একবারও প্রকল্প পরিচালক কাজ পরিদর্শনে আসেননি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চরম গাফিলতি রয়েছে বলছেন এলাকাবাসী।

    মানববন্ধনে বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী ২৪ দিনের মধ্যে কাজ পুরোদমে শুরু করে শেষ না করলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

    প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ১৯৯৪ সালে এই রাস্তার কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তবে দীর্ঘ ৩০ বছরেও এই সড়ক স্থায়ী রূপ পায়নি। বর্তমানে সড়কটি গর্ত আর খানাখন্দে পরিণত হয়ে এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা, শিক্ষা ও চিকিৎসা কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে বলছেন সচেতন নাগরিকবৃন্দ। 
    পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, পরিবহন চালক, রেস্টুরেন্ট ও হোটেল মালিকরা বলছেন, রাস্তা ঠিক না হলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। পর্যটকরা এখানে আসতে ভয় পায় শুধু মাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায়। 

    এ প্রসঙ্গে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রকৌশলী হাসিব আহমেদ দৈনিক একাত্তরের কথাকে জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। মানসম্পন্ন কাজ করতে গিয়ে গতি কিছুটা কম হলেও দ্রুতই কাজ শেষ হবে। কিছু স্থানে কাজের মান খারাপ হওয়ায় সেগুলো আবার মেরামত করা হবে।


    দৈএনকে/জে .আ
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ