সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • ইসলামিক এনজিওগুলোকে সামাজিক ব্যবসায় এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে হাজির হওয়ার নির্দেশে গেজেট প্রকাশ সংস্কারবিরোধী দেখানোর চেষ্টা চলছে পরিকল্পিতভাবে: মির্জা ফখরুল ইউএস বাংলার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জব্দকৃত জমি বিক্রির অভিযোগে ফের বিতর্কে তারিক সিদ্দিক নতুন প্রস্তাবে স্থবিরতা, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিয়ে উদ্বেগ: ফখরুল যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর খামেনির জনসমক্ষে আত্মপ্রকাশ বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার কোনো সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শেষের নাটকে মোস্তাফিজের জাদু, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সিরিজে বাঁচল বাংলাদেশ এশিয়ান কাপে দুর্দান্ত আগমন, তুর্কমেনিস্তানকে গোল বন্যায় ভাসাল বাংলাদেশ নারী দল
  • শেয়ারবাজারে ২৫৭ কোটি টাকার বাউন্ডারি: কে ধরবে ‘ক্যাচ’?

    শেয়ারবাজারে ২৫৭ কোটি টাকার বাউন্ডারি: কে ধরবে ‘ক্যাচ’?
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    বাংলাদেশের ক্রিকেট আইকন সাকিব আল হাসানকে যদি আপনি সবসময় ‘বাউন্ডারি হিটার’ হিসেবে চিনে থাকেন, তাহলে এবার সেই পরিচিতি এক ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে তবে সেটা ব্যাট হাতে নয়, শেয়ারবাজারের কারসাজি কেলেঙ্কারির কোর্টে।

    দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাম্প্রতিক মামলায় তার বিরুদ্ধে উঠেছে প্রতারণার মাধ্যমে ২৫৭ কোটি টাকার শেয়ারবাজার লোপাটে জড়িত থাকার অভিযোগ। এতে প্রশ্ন উঠেছে, এই ‘বাউন্ডারি’ কে মারল, আর কে ধরবে সেই ‘ক্যাচ’?

    একজন আন্তর্জাতিক তারকা এবং সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে সাকিব কেবল একজন খেলোয়াড় নন; তিনি তরুণ সমাজের আদর্শ, রাষ্ট্রীয় মর্যাদার মুখ। অথচ এমন একজন ব্যক্তির নাম শেয়ারবাজারের মতো একটি স্পর্শকাতর ও দুর্নীতিপ্রবণ ক্ষেত্রের বড়সড় কেলেঙ্কারিতে উঠে আসা শুধু দুঃখজনক নয়, ভয়ংকর একটি বার্তাও বহন করে। যদি তিনি নির্দোষ হন, তাহলে এই ক্ষতিকে কীভাবে পূরণ করা যাবে? আর যদি দোষী হন, তাহলে সেলিব্রেটি বলয় আর জনপ্রিয়তা তাকে দায়মুক্তি দেবে কেন?

    সাকিবসহ আরও ১৪ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বলছে, তারা বাজারে ফটকা লেনদেন, জালিয়াতি ও গুজব ছড়িয়ে নির্দিষ্ট কিছু কোম্পানির শেয়ার কৃত্রিমভাবে মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করেন। এর ফলেই একদিকে ওই চক্র কোটি কোটি টাকা ‘রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইন’-এর নামে তুলে নেয়। অন্যদিকে হাজারো খুচরা বিনিয়োগকারী মার খায়। এটি একটি কেবল অর্থনৈতিক অপরাধ নয়, বরং জনআস্থার বিরুদ্ধে সরাসরি হামলা।

    এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই বাউন্ডারির ক্যাচ কে ধরবে? আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো কি আদৌ এতটা স্বাধীন ও শক্তিশালী যে, জনপ্রিয় ও ক্ষমতাধর একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধেও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত চালাতে পারে? পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা বলছে, বাংলাদেশে বড় অপরাধীরা বিচার এড়িয়ে গেছেন ক্ষমতা, পরিচিতি বা পলিটিক্যাল ডিলের ফাঁকফোকর গলে। এবার কি ব্যতিক্রম হবে?

    দুদক ও বিচারব্যবস্থার ওপর এখন দায়িত্ব এসে পড়েছে, জনগণকে এই বার্তা দেওয়া যে, আইন সকলের জন্য সমান। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে হলে এই মামলার প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা ও দ্রুত বিচার প্রয়োজন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর উচিত বাজার কারসাজির বিরুদ্ধে আরও সক্রিয় হওয়া এবং প্রভাবশালী দোষীদের ছাড় না দেওয়া।

    এই মামলার নিষ্পত্তি শুধু সাকিব বা তার সহআসামিদের বিচারের প্রশ্ন নয়’ এটি দেশের শেয়ারবাজার সংস্কৃতি ও সামগ্রিক আইনশাসনেরও একটি টেস্ট ম্যাচ। জনগণ অপেক্ষায় আছে, কে ক্যাচ ধরবে? নাকি আবারও স্লিপ ফিল্ডারে পড়বে আস্থাহীনতার বাউন্ডারি?

    সেলিব্রেটির নাম, জনপ্রিয়তা কিংবা রাজনৈতিক পরিচিতি কোনো অপরাধকে ঢেকে রাখতে পারে না, এটাই হতে হবে রাষ্ট্রের বার্তা। আর শেয়ারবাজারকে যদি সত্যিকারের জনগণের বাজারে রূপান্তর করতে হয়, তাহলে সেই বার্তার বাস্তব প্রমাণ দিতে হবে এখনই।


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ