সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • ইসলামিক এনজিওগুলোকে সামাজিক ব্যবসায় এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে হাজির হওয়ার নির্দেশে গেজেট প্রকাশ সংস্কারবিরোধী দেখানোর চেষ্টা চলছে পরিকল্পিতভাবে: মির্জা ফখরুল ইউএস বাংলার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জব্দকৃত জমি বিক্রির অভিযোগে ফের বিতর্কে তারিক সিদ্দিক নতুন প্রস্তাবে স্থবিরতা, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিয়ে উদ্বেগ: ফখরুল যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর খামেনির জনসমক্ষে আত্মপ্রকাশ বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার কোনো সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শেষের নাটকে মোস্তাফিজের জাদু, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সিরিজে বাঁচল বাংলাদেশ এশিয়ান কাপে দুর্দান্ত আগমন, তুর্কমেনিস্তানকে গোল বন্যায় ভাসাল বাংলাদেশ নারী দল
  • নির্বাচন সামনে রেখে ভিন্ন রকম ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে জামায়াতের দ্বিচারিতা

    নির্বাচন সামনে রেখে ভিন্ন রকম ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে জামায়াতের দ্বিচারিতা
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে ‘নিরপেক্ষতা’ শব্দটির ব্যবহার যতটা প্রবল, তা প্রায়শই তার বাস্তবচিত্রের সঙ্গে মেলানো কঠিন হয়ে পড়ে। সম্প্রতি লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক এবং তা ঘিরে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিকে কেন্দ্র করে জামায়াতে ইসলামী যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, তা একইসঙ্গে প্রশ্নবিদ্ধ, বৈপরীত্যপূর্ণ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত বলেই প্রতীয়মান হয়।

    জামায়াত বলেছে, ওই বৈঠক ও বিবৃতি প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতাকে ‘ক্ষুণ্ন’ করেছে এবং নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ‘জনগণের মধ্যে আশঙ্কা’ তৈরি করেছে। অথচ যে দলটি দীর্ঘদিন ধরে খোলাখুলি একপক্ষীয় নির্বাচনের সমালোচনা করেছে, সেই জামায়াতই এবার আপাত রাজনৈতিক সহাবস্থানের উদ্যোগকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এটা কি তাদের দ্বিচারিতা নয়?

    অবশ্যই, একটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের কাছ থেকে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমদূরত্ব বজায় রাখা প্রত্যাশিত। কিন্তু প্রশ্ন হলো—যে কোনো সংলাপ, এমনকি বিদেশে অনুষ্ঠিত হলেও, যদি তাতে স্বচ্ছতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকে, তাহলে সেটিকে ‘নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন’ বলা কি অতিসরলীকরণ নয়?

    জামায়াতের বক্তব্যে আরো বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার উচিত ছিল দেশে ফিরে এসে সকল দলের সঙ্গে আলোচনা করে তার অভিমত প্রকাশ করা। এ যুক্তি কিছুটা যৌক্তিক হলেও প্রশ্ন রয়ে যায়—যদি প্রধান উপদেষ্টা একাধিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং পরবর্তীতে তা উন্মুক্ত রাখেন, তাহলে সেটা কি একইসঙ্গে স্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক গতি ফেরানোর চেষ্টা নয়?

    উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, জামায়াত আমির নিজেই গত এপ্রিল মাসে একটি বিদেশি মিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তাব দেন। তাহলে বিদেশে রাজনৈতিক আলোচনাকে এখন কেন "রাষ্ট্রীয় শোভনীয়তার বাইরে" বলা হচ্ছে?

    এই দ্বিমুখিতা আসলে রাজনৈতিক সুবিধাবাদেরই পরিচায়ক। যে দলটি অতীতে নিরপেক্ষ সরকারের দাবি করেছে, আজ তারা যখন রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে উত্তরণ সম্ভব এমন সম্ভাবনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, তখন বোঝা যায়—আসলে তাদের আপত্তি নিরপেক্ষতার প্রশ্নে নয়, বরং প্রক্রিয়ায় নিজেদের অংশগ্রহণ না থাকার হতাশা থেকে।

    অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অবশ্যই কাম্য। সে লক্ষ্যে সব দলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ জরুরি। কিন্তু রাজনৈতিক পক্ষগুলোকে প্রথমেই তাদের নিজেদের অবস্থান সৎ ও স্বচ্ছ করতে হবে। অভিযোগ ও সন্দেহের চক্রে আবর্তিত না হয়ে ভবিষ্যতের জন্য গঠনমূলক ভূমিকা রাখা এখন সময়ের দাবি।


    জামায়াতের বক্তব্যে "নিরপেক্ষতা"র যে আশঙ্কা তোলা হয়েছে, তা নিজস্ব রাজনৈতিক অবস্থানের দ্বৈত মানদণ্ডই তুলে ধরে। শুধু সমালোচনা নয়, গঠনমূলক অংশগ্রহণই এই মুহূর্তে দেশকে অস্থিরতা থেকে মুক্তি দিতে পারে।


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ