সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • ইসলামিক এনজিওগুলোকে সামাজিক ব্যবসায় এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে হাজির হওয়ার নির্দেশে গেজেট প্রকাশ সংস্কারবিরোধী দেখানোর চেষ্টা চলছে পরিকল্পিতভাবে: মির্জা ফখরুল ইউএস বাংলার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জব্দকৃত জমি বিক্রির অভিযোগে ফের বিতর্কে তারিক সিদ্দিক নতুন প্রস্তাবে স্থবিরতা, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিয়ে উদ্বেগ: ফখরুল যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর খামেনির জনসমক্ষে আত্মপ্রকাশ বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার কোনো সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শেষের নাটকে মোস্তাফিজের জাদু, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সিরিজে বাঁচল বাংলাদেশ এশিয়ান কাপে দুর্দান্ত আগমন, তুর্কমেনিস্তানকে গোল বন্যায় ভাসাল বাংলাদেশ নারী দল
  • মাদক: সমাজের নীরব ঘাতক

    মাদক: সমাজের নীরব ঘাতক
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    মাদক আমাদের সমাজের এমন এক নীরব ঘাতক, যা প্রতিদিনই ধ্বংস করে দিচ্ছে আমাদের সম্ভাবনাময় প্রজন্মকে। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের নানা প্রয়াসের মাঝেও মাদকের করাল গ্রাস থেকে আমরা আজও পুরোপুরি মুক্ত হতে পারিনি। বরং দিন দিন এর ভয়াবহতা আরও ব্যাপক হচ্ছে।


    বাংলাদেশে মাদকের প্রবেশদ্বার মূলত সীমান্ত অঞ্চল। ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, আইস ইত্যাদি ভয়াবহ মাদকদ্রব্য এখন শুধু শহরেই নয়, ছড়িয়ে পড়েছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, বেকার তরুণ এমনকি দিনমজুর শ্রেণিও আজ মাদকের থাবায় জর্জরিত। এটি এখন আর কেবল আইনশৃঙ্খলার সমস্যা নয়—এটি একটি গভীর সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সংকটে পরিণত হয়েছে।


    মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের নানা অভিযানের কথা বলতে গেলে, স্বীকার করতেই হয় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা বারবার বলা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবি মাঝেমধ্যে অভিযান চালালেও মাদকের মূল উৎস ও চক্র এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে কিছু অসাধু কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনিক অংশের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদ।


    একইসাথে সমাজেও একধরনের নীরবতা বিরাজ করছে। আমরা যখন কোনো বাড়ির তরুণ ছেলেটিকে নেশাগ্রস্ত দেখি, তখন হয় মুখ ফিরিয়ে নেই, নয়তো ‘লোকলজ্জা’র ভয়ে চুপ করে থাকি। অথচ এই চুপ করাটাই সমস্যাকে আরও গভীর করে তোলে।


    মাদকের বিস্তার রোধে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি দরকার ব্যাপক জনসচেতনতা। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিতভাবে মাদকবিরোধী সেমিনার, কাউন্সেলিং, নাটক বা চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। পরিবারকে হতে হবে প্রথম প্রতিরক্ষা লাইন, সন্তানের আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখলে তা অবহেলা না করে সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব নিয়ে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।
    একইসঙ্গে বিকল্প বিনোদন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি না করা গেলে তরুণ প্রজন্মের একাংশ বারবার নেশার দিকে ঝুঁকবেই। খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও দক্ষতা উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বিস্তার হতে পারে একটি কার্যকর প্রতিরোধক ব্যবস্থা।


    আমরা চাই, মাদকবিরোধী লড়াই হোক একটিমাত্র অভিযানে সীমাবদ্ধ নয়—বরং এটি হোক পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্মিলিত স্থায়ী উদ্যোগের নাম। কারণ, মাদক শুধু একজন ব্যক্তিকে নয়, ধ্বংস করে পুরো একটি পরিবার, একটি সমাজ, একটি জাতির ভবিষ্যৎ।


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ