সিগারেট খেলে কী ক্ষতি হতে পারে


সিগারেট—একটি ছোট কিন্তু ধ্বংসাত্মক অভ্যাস। সাময়িক আরামের মোহে মানুষ যেটি হাতে নেয়, সেটিই ধীরে ধীরে শরীর ও মনের ওপর ভয়ংকর প্রভাব ফেলে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিগারেট খাওয়ার ফলে ক্যানসার, হৃদরোগ, শ্বাসকষ্টসহ অসংখ্য জটিল রোগের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, বিশ্বে প্রতি বছর ৮০ লাখের বেশি মানুষ তামাকজনিত রোগে মারা যায়। এর মধ্যে প্রায় ১২ লাখ মানুষ প্যাসিভ স্মোকিং বা অন্যের ধূমপানের ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রাণ হারান।
প্রধান স্বাস্থ্যঝুঁকি
১. ক্যানসারের কারণ:
সিগারেটে থাকা ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ফুসফুস, গলা, মুখ, খাদ্যনালি এবং মূত্রাশয়সহ বিভিন্ন অঙ্গে ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে।
২. হৃদরোগ:
ধূমপান রক্তনালিকে সংকুচিত করে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় এবং হৃদপিণ্ডে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। এর ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
৩. শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা:
সিগারেটের ধোঁয়া ফুসফুসের কার্যক্ষমতা ধ্বংস করে দেয়। এতে ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা এবং ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD) হতে পারে।
৪. প্রজনন ও গর্ভধারণে সমস্যা:
নারীদের ক্ষেত্রে সিগারেট বন্ধ্যাত্বের সম্ভাবনা বাড়ায়। গর্ভবতী মায়ের ধূমপানে গর্ভের শিশুর জন্মগত ত্রুটি, কম ওজন বা মৃত সন্তান প্রসবের আশঙ্কা থাকে।
৫. দাঁত ও মুখের ক্ষতি:
সিগারেট দাঁতের রং বদলে দেয়, মাড়িতে সংক্রমণ ঘটায় এবং মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
পরিবারের কেউ ধূমপান করলে তার ধোঁয়ায় শিশুসহ আশপাশের ব্যক্তিরাও ক্ষতির মুখে পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের শ্বাসতন্ত্র এখনও পূর্ণ বিকশিত না হওয়ায় তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ধূমপান ছাড়ার জন্য মানসিক প্রস্তুতির পাশাপাশি পেশাদার সহায়তা নেওয়া জরুরি। এ জন্য নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি, পরামর্শ ও কাউন্সেলিং প্রয়োজন।
এই উপায়গুলো ধূমপান ছাড়তে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
সিগারেট নিজে খেলে যেমন ক্ষতি, অন্যকে খাওয়ালেও ক্ষতি। এটি শুধু একজন ব্যক্তির স্বাস্থ্য নয়, পুরো সমাজের জন্য হুমকি। জীবন বাঁচাতে হলে আজই সিগারেটকে ‘না’ বলতে হবে।
